মোটরযানের মালিকানা বদল: পদ্ধতি, কাগজপত্র এবং নির্দেশিকা

বাংলাদেশে পুরাতন মোটরযান কেনা-বেচার পর এর মালিকানা বদল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী, মালিকানা বদল না করলে আইনগত জটিলতার মুখোমুখি হতে পারেন। এই প্রক্রিয়া নিয়ে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি, যাতে ক্রয় বা বিক্রয়ের পরপরই মালিকানা বদল করা যায়।

মালিকানা বদল না করলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, বিক্রিত গাড়ি ক্রেতা যদি অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করে এবং তা আপনার নামে রেজিস্টার্ড থাকে, তাহলে আপনি অযথা আইনি জটিলতায় পড়বেন। অপরদিকে, রেজিস্ট্রেশন না করিয়ে কোনো গাড়ি ক্রয় করলে, বিক্রেতা চাইলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। এ ধরনের সমস্যার এড়াতে অবশ্যই মোটরযানের মালিকানা বদল করতে হবে।

মোটরযানের মালিকানা বদল করতে হলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) নির্দেশিত কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি ক্রেতা, বিক্রেতা এবং মোটরযানের কাগজপত্রের উপর ভিত্তি করে ভিন্ন হয়ে থাকে। 

ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েরই সর্বপ্রথম প্রয়োজন টিও ফর্ম (Transfer of Ownership) সংগ্রহ করা। যা আপনি অফিস বা অনলাইন দুইভাবেই করতে পারেন। বিআরটিএ ওয়েবসাইট থেকে এই ফর্ম দুটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। টিওতে ক্রেতার স্বাক্ষর এবং টিটিওতে ক্রেতার নমুনা স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে।

এছাড়াও বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) নির্দেশিত কিছু ক্রেতা এবং বিক্রেতার ব্যাক্তিগত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন। 

মোটরযানের মালিকানা বদল করতে হলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কর্তৃক নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। ফি-এর পরিমাণ নির্ভর করে গাড়ির ধরন, সিসি, এবং অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়ের ওপর। বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোটরযানের জন্য আলাদা ফি নির্ধারিত থাকে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) ওয়েবসাইট হতে আপনার ফি কত দেখে নিতে পারেন।
এসব ফি অনলাইনে অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেওয়া যায়।

কাগজপত্র এবং ফি জমা হলে, গাড়িটি বিআরটিএ সার্কেল অফিসে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়। সঠিক কাগজপত্র থাকলে, পরিদর্শক সিল এবং স্বাক্ষর করবেন।
 

মোটরযানের মালিকানা বদলের সময় বিক্রেতার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। বিক্রেতাকে অনাপত্তি সনদও দিতে হবে।
 

মালিকানা বদল সম্পন্ন হলে, নতুন মালিককে বায়োমেট্রিক (ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি) প্রদান করতে হবে। বিআরটিএ একটি সম্ভাব্য তারিখ প্রদান করবে, যা আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে আপনার ফোন নাম্বারে জানিয়ে দেওয়া হবে। এই এসএমএস টি আসবে নতুন রেজিস্ট্রেশন সনদ পাওয়ার পর।

যদি মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন করা না হয়, তাহলে বাংলাদেশ ট্রাফিক আইন অনুযায়ী ৭৪ ধারা অনুসারে ৫,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে ১০,০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে।

মোটরযানের মালিকানা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য প্রক্রিয়া। সঠিক নিয়ম অনুসরণ করলে, আপনি আইনি জটিলতা থেকে মুক্তি পাবেন। তাই, মালিকানা বদলের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করে বিআরটিএ অফিসে জমা দিন এবং নিরাপদ থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *